
- সেন্ট্রাল ডেস্ক
- ·
- খুলনাঞ্চল
- ·
- ২২ এপ্রিল, ২০২৫ | রাত ৮:৫০
সেন্ট্রাল ডেস্ক | ২২ এপ্রিল, ২০২৫ | মঙ্গলবার | রাত ৮:৫০
গত শুক্রবার কয়রা উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মইনুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এই মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক ২ জন সংসদ সদস্যসহ মোট ১১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে কয়রা সদরে একটি মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত মিছিল ও সমাবেশে পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা গুলিবর্ষণ ,বোমা বিস্ফোরণ ও দেশিয় অস্ত্র সহ লাঠিসোটা নিয়ে চতুর্মুখী হামলা চালায়। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের হামলায় ২৯ জন আহত হন। এছাড়া জাহিদুল, ফারুক শেখ ও মুসানুর গুলিবিদ্ধ হয় এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে জাহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
মামলার বাদী ছবিরন নেছা দৈনিক খুলনা পোস্টকে বলেন,আমার স্বামী অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের ছিলেন। তিনি একজন দিন মজুর ছিলেন। জামায়াতে ইসলামীর মিছিলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।১৬ মাস বয়সী একমাত্র কন্যাকে নিয়ে বিচারের দাবিতে লোকের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভয়ে কেউ সহযোগিতা করার সাহস পায় নি। এতদিন পরিবারের সদস্যরা মামলা হামলার ভয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।
দীর্ঘদিন পরে দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলে পরিবারের সদস্যদের পরামর্শে কয়রা উপজেলা প্রেস ক্লাবে স্বামী হত্যার বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছি এবং ন্যায় বিচারের আশায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। দীর্ঘদিন পরে মামলাটি রুজু হওয়ায় পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।
তবে তিনি আক্ষেপ করে বলেন,কিছু সাংবাদিক যারা পূর্বে তথাকথিত ফ্যাসিস্ট সরকারের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে।গত ৫ আগষ্টের পরে পালিয়ে থেকে বর্তমান পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করে তারা আবার জনমতে সংশয় সৃষ্টি করছে।কয়রা উপজেলার হাজার হাজার মানুষ আমার স্বামীর হত্যার স্বাক্ষী রয়েছেন।তারাও এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায় বিচার চায়।যারা বিচার কার্যক্রমকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে, তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার জন্য তিনি প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।
নিহত জাহিদুল ইসলামের বোন রোকেয়া খাতুন বলেন, কোর্টে মামলা করলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা সোহরাব আলী সানার আত্মীয়-স্বজন ও তাদের অনুসারী কয়েকজন এসে আমাদের হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে। কয়েকজন এসে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মিথ্যা মামলা করেছি। আমাদেরকে এর প্রতিদান বুঝিয়ে দেবে এই ধরনের কথা বলে শাসিয়ে গেছে।আমরা ন্যায়বিচারের আশায় মামলা করেছি কিন্তু এসব কর্মকাণ্ডে বিব্রত বোধ করছি।
আমরা দীর্ঘদিন পরে ন্যায় বিচারের আশায় বুক বেঁধে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু বিগত দিনের ন্যায় স্বৈরাচার সরকারের দোসরদের অপতৎপরতা দেখে হতাশ হয়ে পড়েছি।আমি ২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর ঐ মিছিলে গিয়ে বুকে ও কোমরে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে ছিলাম।এত দিন কেউ আমাদের সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসে নি। ঐ দিনে আহত হয়ে চিকিৎসা করতে গিয়ে আমি সহ জামায়াতের বহু নেতাকর্মী ভিটাবাড়ি বিক্রয় করে দিয়েছি।তবে এখন সুদিন এসেছে আমাদের এই নির্মমভাবে নির্যাতনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে দলীয় ও সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা পাব বলে আশা করছি বলে জানিয়েছেন মিছিলে গুলিবিদ্ধ ফারুক হোসেন।
খুলনা জেলা জামায়াতের ইসলামীর আমির মাওলানা ইমরান বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বিগত দিনের সকল হত্যাকান্ড ও জুলুম নির্যাতনের বিচার চায়।তবে কোন নিরপরাধ মানুষের হয়রানি বা কষ্টের শিকার না হয় সে ব্যাপারে নিশ্চিত করতে হবে।