খুলনা, বাংলাদেশ
সোমবার | জুন ৩০, ২০২৫ | ০৫:২৪ বিকাল
logo

বনদস্যু মুক্ত সুন্দরবনের দাবিতে মানববন্ধন

বনদস্যু মুক্ত সুন্দরবনের দাবিতে মানববন্ধন
বনদস্যু মুক্ত সুন্দরবনের দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ | রবিবার | দুপুর ৪:০৮

সুন্দরবনকে দস্যুমুক্তকরণ ও জেলে-বাওয়ালিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে খুলনার সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় কয়রা উপজেলার সুতিয়া বাজার এলাকায় সুন্দরবন সুরক্ষা আন্দোলন এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন।

কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক আ ব ম আবদুল মালেকের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন শিক্ষক মহসিন আলম, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়রা উপজেলার ছাত্র প্রতিনিধি মো. গোলাম রব্বানী, কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দীন, বনজীবী জেলে ইমান আলী, মৌয়াল আলাউদ্দীন প্রমুখ।

মানববন্ধনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়রা উপজেলার ছাত্র প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী বলেন, প্রশাসন থেকে দস্যুমুক্ত সুন্দরবন ঘোষণা দেওয়া হলেও নজরদারির অভাবে দীর্ঘদিন পর আবারও ডাকাতের উৎপাত বেড়েছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ডাকাত দল ধারালো অস্ত্র ও বন্দুক নিয়ে বনজীবীদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে। সুন্দরবনে এভাবে দস্যুতা চলতে থাকলে বনজীবীদের জীবিকা, পর্যটন ও রাজস্ব আদায়ে হুমকির পাশাপাশি বিপন্ন হবে বন্য প্রাণী আর প্রাণবৈচিত্র্য। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দস্যু দমনে অবশ্যই সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে হবে।

মানববন্ধনে বনজীবী জেলেরা বলেন, গত কয়েক মাস ধরে সুন্দরবনে ডাকত নেমেছে। জেলেদের আটকে রেখে  মাথাপিছু ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত মুক্তিপণ আদায় করছে তাঁরা। মুক্তিপণের টাকা দিতে বিলম্বের কারণে জিম্মি জেলেদের বনের মধ্যে আটকে বেপরোয়া শারীরিক নির্যাতন করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে দস্যুতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে জেলেদের সুন্দরবনে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক আ ব ম আবদুল মালেক বলেন, নজরদারির অভাবে সুন্দরবনে আবারও দস্যুদের উৎপাত বেড়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি সুন্দরবনে ভয় বাড়লে আবারও বন উপকূলে বাড়বে দস্যুদের পৃষ্ঠপোষক মহাজনদের দৌরাত্ব। এরইমধ্যে অনেক জেলে ভয়ে সুন্দরবনে যাচ্ছে না। কয়েক মাস ধরে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে ডাকাতদল ঘুরে বেড়াচ্ছে। লুট করছে জেলেদের মাছ কাঁকড়া। বনদস্যুরা এখনো ছোট ছোট দলে আছে। ওরা বড় হওয়ার আগেই ব্যবস্থা নেয়া দরকার। দায়িত্বশীলরা একটু তৎপর হন। 

মানববন্ধনে বনজীবী জেলে-বাওয়ালি, বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন, বনজীবী পরিবারের সদস্য ও উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ধাপে ধাপে সুন্দরবন অঞ্চলের ৩২টি দস্যু বাহিনীর ৩২৮ জন দস্যু ৪৬২টি অস্ত্র ও ২২ হাজার ৫০৪টি গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করেছিলেন। পরে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রাণবৈচিত্র্যে ভরা সুন্দরবনকে ‘দস্যুমুক্ত’ ঘোষণা করা হয়।